এক থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে একটু আলাদা করেই ভাবতে হবে। সকালবেলা একটি ডিম বা ডিমের তৈরি শিশুর পছন্দের যেকোনো খাবার দেওয়া যেতে পারে। সঙ্গে পাকা কলা বা পেঁপের মতো নরম ফল। এই বয়সী শিশুরা সাধারণত বুকের দুধও পান করে। ব্যস্ততার মাঝে এ বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। সঠিক সময় শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এই বয়সী বাচ্চাদের বেশি চিনি, লবণ বা ঝালযুক্ত খাবার দেওয়া ঠিক নয়। অল্প মিষ্টি দিয়ে পুডিং বা কাস্টার্ড করে দেওয়া যেতে পারে। খাবারে মিষ্টিভাব আনতে চিনির বদলে মধু বা খেজুরের সিরাপ ব্যবহার করা ভালো। কম ঝাল-মসলার খাবার আলাদা করে রান্না করা সম্ভব না হলে অল্প পানিতে ধুয়ে দিতে পারেন। সম্ভব হলে অল্প করে খিচুড়ি রান্না করতে পারেন শিশুর জন্য। ঈদের রান্না থেকে মাছ বা মুরগি টুকরা করে খিচুড়িতে মিশিয়ে দিলে পুষ্টির দিকটাও নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। নতুন খাবার খেতে আগ্রহী না হলে অন্যান্য দিনের মতো খাবার খেতে দিন শিশুকে।
তিন থেকে চার বছর বয়সের শিশুরা সাধারণত পছন্দ বলতে ও বোঝাতে পারে। তাই তাদের ঈদের মেন্যু নির্বাচন করা সহজ হবে। বড়দের জন্য তৈরি মিষ্টান্ন যেমন—সেমাই বা পায়েস এই বয়সী শিশুরা খেতে পারে। মনে রাখুন, শিশু ঘুম থেকে উঠলে প্রথমেই পানি খাওয়াতে হবে। তারপর অন্য খাবার। খুব ভালো হয় শিশুর কাছ থেকে তার ঈদের খাবারের মেন্যু জেনে নিলে। সকালে ডিম খাওয়ার পর পছন্দের মিষ্টান্ন খেতে পারে। এই বয়সের শিশুরা মুরগির বিভিন্ন মেন্যু যেমন—চিকেন বল, নাগেটস, শাশলিক খেতে ভালোবাসে। তা ছাড়া মুরগির রোস্টে কম ঝাল থাকে, এটাও শিশুরা খেতে পারে। অল্প পরিমাণে গরু বা খাসির মাংস এবং মাছ খেতে পারে। ভাত, পোলাও বা খিচুড়ি ইচ্ছামতো যা খুশি খেতে পারে। তবে সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি ও পানীয় খাওয়ানোর দিকে অভিভাবকদের নজর দিতে হবে। লেবু শরবত, ঘরে বানানো ফলের জুস, লাচ্ছি ও ডাবের পানি খাওয়ান বেশি করে। বিকেলের নাশতায় বড়দের খাবার থেকে পছন্দমতো খাবার খেতে মানা নেই। রাতের খাবারেও একই কথা প্রযোজ্য। ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে শিশুর রাতের খাবার শেষ করতে হবে।
অনেকেই ঈদের দিন রান্নার ঝামেলায় শিশুকে প্যাকেটজাত খাবার যেমন—কেক, চিপস, জুস চকোলেট, চানাচুর ইত্যাদি দেন। এগুলো শিশুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর; বরং শিশুর রুচিমতো ঘরে রান্না যেকোন খাবার খেতে দিন।